0 1 1 2 3 5 8 13 21 34 55 89 144 233 …………
উপরের ডিজিট গুলোর মাঝে একটা মজার ব্যাপার আছে, বলুন দেখি ব্যাপার টা কি? হ্যা, ধরে ফেলেছেন। এই ধারার প্রত্যেকটি ডিজিট তার আগের দুইটি ডিজিটের যোগফল। আর এই ধারাটাকেই বলা হয় ফিবোনাক্কি ধারা এবং আমি সহ অনেকের ধারনা ব্যাপক রহস্যময় ধারা।ইতালিয়ান গণিতবিদ লিউনার্দো ফিবোনাক্কি এই ধারাটি প্রকাশ করেন।
প্রথম থেকেই বলে আসছি রহস্যময়তার কথা, আসুন এখনি কিছু উদাহরন দেখি। কিন্তু তার আগে আমাদের অনেক গুলো ফিবোনাক্কি সংখ্যা দরকার, চলুন এক নজরে প্রথম ৪৭ টা ফিবোনাক্কি সংখ্যা দেখে নেই-
F0= 0 |
F1= 1 |
F2= 1 |
F3= 2 |
F4= 3 |
F5= 5 |
F6= 8 |
F7= 13 |
F8= 21 |
F9= 34 |
F10= 55 |
F11= 89 |
F12= 144 |
F13= 233 |
F14= 377 |
F15= 610 |
F16= 987 |
F17= 1597 |
F18= 2584 |
F19= 4181 |
F20= 6765 |
F21= 10946 |
F22= 17711 |
F23= 28657 |
F24= 46368 |
F25= 75025 |
F26= 121393 |
F27= 196418 |
F28= 317811 |
F29= 514229 |
F30= 832040 |
F31=£ 1346269 |
F32= 2178309 |
F33= 3524578 |
F34= 5702887 |
F35= 9227465 |
F36= 14930352 |
F37= 24157817 |
F38= 39088169 |
F39= 63245986 |
F40= 102334155 |
F41= 165580141 |
F42= 267914296 |
F43= 433494437 |
F44= 701408733 |
F45= 1134903170 |
F46= 1836311903
আমরা এক কাজ করি, এই লিস্ট থেকে পরপর যেকোনো 4 টি সংখ্যা নেই।
8 13 21 34
এখন ১ম সংখ্যার সাথে ৪র্থ সংখ্যাটি যোগ করি : 8+34= 42
২য় সংখ্যা সাথে ৩য় সংখ্যা যোগ করি : 13+21= 34
এখন যোগফল দুটি বিয়োগ করলে 42-34= 8 !! সেই প্রথম সংখ্যাটি
অর্থাৎ ফিবোনাক্কি ধারার যেকোনো ৪ টি সংখ্যার শেষের দুটির যোগফল এবং মাঝের দুটির যোগফলের পার্থক্য প্রথম সংখ্যাটার সমান।
গানিতিক ভাষায়-
(Fn +Fn+4) – (Fn+3 +Fn+2) = Fn
এবার দেখি আরেকটা মজার ব্যাপার, উপরের ফিবোনাক্কি সংখ্যাগুলো যেগুলো ২ বা তার বেশি ডিজিটের সেগুলোর শেষ ডিজিট গুলো লিখি-
3 1 4 5 9 4 3…………
একটু খেয়াল করলেই দেখবেন এই নতুন ধারাটারও যেকোনো ডিজিট তার আগের ২ ডিজিটের যোগফলের শেষ ডিজিটের সমান। যেমন 9+4=13, এর শেষ ডিজিট 3 ।
আরেকটা অদ্ভুত ব্যাপার হল ফিবোনাক্কি ধারার প্রতি 60 ফিবোনাক্কি সংখ্যার পর আবার ফিবোনাক্কি ধারাই শেষ ডিজিট হিসেবে ফিরে আসে। যেমন-
F60 =1548008755920
F61 =2504730781961
F62 =4052739537881
F63 =6557470319842
F64 =10610209857723
F65 =17167680177565
শেষ ডিজিটগুলো 0 1 1 2 3 5……. আবার ফিবোনাক্কি সংখ্যা!!!
এতখন আসলে ফিবোনাক্কি ধারার বৈশিস্ট্য সম্পর্কে বলছিলাম, ফিবোনাক্কি ধারার আসল মাহার্থ হচ্ছে প্রকৃতির মাঝে ছড়ানো ছিটানো ভাবে থাকা এই ধারা। চলুন দেখি–
মৌমছির জীবন টা একটু অদ্ভুত। একটি ছেলে মৌমাছির জন্ম দেয় শুধু মা মৌমাছি, তার জন্য বাবা মৌমাছির প্রয়োজন নেই। কিন্তু একটি মেয়ে মৌমাছির জন্ম দেয়ার জন্য বাবা এবং মা উভয়েরই প্রয়োজন হয়। আমরা যদি মেয়ে মৌমাছিকে F আর ছেলে মৌমাছিকে M ধরে একটা বংশতালিকা করি তাহলে চিত্রটা এমন হবে-
মৌমাছির বংশতালিকা উপর থেকে মৌমাছির পরিবারে সদস্য সংখ্যা গুনতে থাকেলে দেখা যাবে- 0 1 1 2 3 5 8 13 21……., ফিবোনাক্কি ধারা!!!
আসুন এইবার একটু খরগোসের জীবন চক্র দেখি। এক জোড়া খরগোস বড় হতে সময় লাগে ১মাস।বড় হবার পর ২য় মাস থেকে প্রতিমাসে মেয়ে খরগোসটি ১টি ছেলে আর ১টি মেয়ে অর্থাৎ এক জোড়া খরগোসের জন্ম দেয়। এখন একটু হিসেব করি।
মাস-১ ; ১টি ছেলে আর ১টি মেয়ে বাচ্চা খরগোস ; জোড়া সংখ্যা-১
এই জোড়া বাচ্চা খরগোস গুলোর বড় হতে ১ মাস সময় লাগবে, ফলে-
মাস-২; ১টি ছেলে আর ১টি মেয়ে বড় খরগোস ; জোড়া সংখ্যা-১
বড় হওয়ার পর তারা একজোড়া বাচ্চা খরগোস জন্ম দেবে, তাহলে-
মাস-৩; ১ জোড়া বাচ্চা খরগোস আর ১ জোড়া বড় খরগোস; জোড়া সংখ্যা-২
এরপর, বাচ্চা খরগোস গুলো ১ মাসে বড় হবে এবং এই সময়ের মাঝে বড় খরগোস আরেক জোড়া বাচ্চার জন্ম দেবে, তাই-
মাস-৪; ১ জোড়া বাচ্চা খরগোস আর ২ জোড়া বড় খরগোস, জোড়া সংখ্যা-৩
এর পরের মাসে, ১ মাসে বাচ্চা খরগোস বড় হবে এর এর মাঝে বড় ২ জোড়া খরগোস আরোও ২ জোড়া বাচ্চা খরগোস জন্ম দেবে,
মাস-৫; ২ জোড়া বাচ্চা আর ৩ জোড়া বড় খরগোস,জোড়া সংখ্যা-৫……………… এভাবেই চলতে থাকবে।
তাহলে জোড়া সংখ্যা গুলো একটু লিখি- 1 1 2 3 5 ……..!!!! আমি কিছু বলব না, আপনারাই বুঝে নিন