PK

Showing posts with label চাঁদের পাহাড়. Show all posts
Showing posts with label চাঁদের পাহাড়. Show all posts

চাঁদের পাহাড়/পরিশিষ্ট

পরিশিষ্ট
 সল্‌স্‌বেরি থাকতে সে সাউথ রোডেসিয়ান মিউজিয়ামের কিউরেটর প্রসিদ্ধ জবতত্ত্ববিদ্‌ ডাঃ ফিট্‌জেরাল্ডের সঙ্গে দেখা করেছিল, বিশেষ করে বুনিপের কথাটা তাঁকে বলবার জন্যে। দেশে ফিরে আসবার কিছুদিন পরে ডাঃ ফিট্‌জেরাল্ডএর কাছ থেকে নিম্নলিখিত পত্রখানা পায়।
The South Rhodesian Museum
Salisbury, Rhodesia 
South Africa  
January 12,1911 
Dear Mr. Chowdhury,
 I am writing this letter to fulfil my

চাঁদের পাহাড়/চতুর্দশ পরিচ্ছেদ

চোদ্দ
সলস্‌বেরী ! কত দিনের স্বপ্ন !...
 আজ সে সত্যিই বড় একটা ইউরোপীয় ধরনের শহরের ফুটপাতে দাঁড়িয়ে । বড় বড় বাড়ী, ব্যাঙ্ক, হোটেল, দোকান, পিচঢালা চওড়া রাস্তা, একপাশ দিয়ে ইলেকট্রিক ট্রাম চলচে, জুলু রিকসাওয়ালা রিকসা টানচে, কাগজওয়ালা কাগজ বিক্রী করচে । সবই যেন নতুন, যেন এসব দৃশ্য জীবনে কখনো সে দেখেনি ।
 লোকালয়ে তো এসেচে, কিন্তু সে একেবারে কপর্দ্দকশূন্য । এক পেয়ালা চা খাবার পয়সাও তার নেই । কাছে একটা ভারতীয় দোকান দেখে তার বড় আনন্দ হোল । কতদিন যেন দেখেনি স্বদেশবাসীর মুখ । দোকানদার মেমন মুসলমান, সাবান ও গন্ধদ্রব্যের পাইকারী বিক্রেতা । খুব বড় দোকান । শঙ্করকে দেখেই সে বুঝলে এ দুঃস্থ ও বিপদগ্রস্ত । নিজে দু’টাকা সাহায্য করলে ও একজন বড় ভারতীয় সওদাগরের সঙ্গে দেখা করতে বলে দিলে ।
 টাকা দুটী পকেটে নিয়ে শঙ্কর আবার পথে

চাঁদের পাহাড়/ত্রয়োদশ পরিচ্ছেদ

তেরো
 দুপুরের রোদে যখন দিক-দিগন্তে আগুন জ্বলে উঠ্‌লো, একটা ছোট্ট পাথরের ঢিবির আড়ালে সে আশ্রয় নিলে। ১৩৫° ডিগ্রী উত্তাপ উঠেচে তাপমান যন্ত্রে, রক্তমাংসের মানুষের পক্ষে এ উত্তাপে পথহাঁটা চলে না। যদি সে কোনরকমে এই ভয়ানক মরুভূমির হাত এড়াতে পারতো, তবে হয়তো জীবন্ত অবস্থায় মানুষের আবাসে পৌঁছুতেও পারতো। সে ভয় করে শুধু এই মরুভূমি, সে জানে কালাহারী মরু বড় বড় সিংহের বিচরণভূমি। তার হাতে রাইফেল আছে—রাতদুপুরেও একা যত বড় সিংহই হোক, সম্মুখীন হতে সে ভয় করে না—কিন্তু ভয় হয় তৃষ্ণা রাক্ষসীকে। তার হাত থেকে পরিত্রাণ নেই। দুপুরে সে দু’বার মরীচিকা দেখলে। এতদিন মরুপথে আসতেও এ আশ্চর্য্য নৈসর্গিক দৃশ্য দেখেনি, বইয়েই পড়েছিল মরীচিকার কথা। একবার উত্তর পূর্ব্ব কোণে, একবার দক্ষিণ পূর্ব্ব কোণে, দুই মরীচিকাই কিন্তু প্রায় এক রকম—অর্থাত্‍ একটা বড় গম্বুজওয়ালা মসজিদ বা গির্জ্জা, চারপাশে খর্জ্জুরকুঞ্জ, সামনে বিস্তৃত জলাশয়। উত্তরপূর্ব্ব কোণের মরীচিকাটা বেশী স্পষ্ট ।
 সন্ধ্যার দিকে দূরদিগন্তে মেঘমালার মত

চাঁদের পাহাড়/দ্বাদশ পরিচ্ছেদ

গুহার মধ্যে ঢুকে শঙ্কর টর্চ্চ জ্বেলে (নতুন ব্যাটারি তার কাছে ডজন দুই ছিল) দেখলে গুহাটা ছোট, মেজেটাতে ছোট ছোট পাথর ছড়ানো, বেশ একটা ছোটখাটো ঘরের মত । গুহার এক কোণে ওর চোখ পড়তেই অবাক হয়ে রইল । একটা ছোট্ট কাঠের পিপে ! এখানে কি করে এল কাঠের পিপে !
 এগিয়ে দুপা গিয়েই সে চমকে উঠল । গুহার দেওয়ালের ধার ঘেসে শায়িত অবস্থায় একটা সাদা নরকঙ্কাল, তার মুণ্ডটা দেওয়ালের দিকে ফেরানো । কঙ্কালের আশে পাশে কালো কালো থলে ছেড়ার মত জিনিষ, বোধ হয় সেগুলো পশমের কোটের অংশ । দুখানা বুট জুতো কঙ্কালের গায়ে এখনও লাগানো । একপেশে একটা মরচে-পড়া বন্দুক ।
 পিপেটার পাশে একটা ছিপি-আঁটা বোতল । বোতলের মধ্যে একখানা কাগজ । ছিপিটা খুলে কাগজখানা বার করে দেখলে, তাতে ইংরিজিতে কি লেখা আছে ।
 পিপেটাতে কি আছে দেখবার জন্যে যেমন সে সেটা নাড়াতে গিয়েচে, অমনি পিপের নীচে থেকে একটা ফোঁস ফোঁস শব্দ শুনে ওর শরীরের রক্ত ঠাণ্ডা হয়ে গেল । নিমেষের মধ্যে একটা প্রকাণ্ড সাপ মাটী থেকে হাত তিনেক উঁচু হয়ে ঠেলে উঠল। বোধ হয়, ছোবল মারবার আগে সাপটা এক সেকেণ্ড দেরী করেছিল। সেই এক সেকেণ্ডের দেরী করার জন্যে শঙ্করের প্রাণ রক্ষা হোল। পরমুহূর্ত্তেই শঙ্করের .৪৫ অটোমেটিক কোল্ট গর্জ্জন করে উঠল । সঙ্গে সঙ্গে ভীষণ বিষধর 'স্যাণ্ড ভাইপার' এর মাথাটা ছিন্নভিন্ন হয়ে, রক্ত-

চাঁদের পাহাড়/একাদশ পরিচ্ছেদ

এগারো
 শঙ্কর একটু ঘুমিয়ে পড়েছিল বোধ হয়, কিম্বা হয়তো অজ্ঞান হয়েই পড়ে থাকবে। মোটের ওপর যখন আবার জ্ঞান ফিরে এল, তখন ঘড়িতে বারোটা—সম্ভবতঃ রাত বারোটাই হবে। ও উঠে আবার চলতে সুরু করলে। এক জায়গায় তার সামনে একটা পাথরের দেওয়াল পড়লো—তার রাস্তা যেন আট্‌কে রেখেচে। টর্চ্চের রাঙা আলো একটিবার মাত্র জ্বালিয়ে সে দেখলে, যে দেওয়াল ধরে সে এতক্ষণ যাচ্ছিল, তারই সঙ্গে সমকোণ করে এ দেওয়ালটা আড়াআড়ি ভাবে তার পথ রোধ করে দাঁড়িয়ে।
 হঠাৎ সে কাণখাড়া করলে...অন্ধকারের মধ্যে কোথায় যেন ক্ষীণ জলের শব্দ পাওয়া যাচ্ছে না?...
 হাঁ...ঠিক জলের শব্দই বটে...কুলু কুলু, কুলু

চাঁদের পাহাড়/দশম পরিচ্ছেদ

দশ
 সে দিন সে রাত্রিও কেটে গেল । শঙ্কর এখন দুঃসাহসে মরীয়া হয়ে উঠেচে । যদি তাকে প্রাণ নিয়ে এ ভীষণ অরণ্য থেকে উদ্ধার পেতে হয়, তবে তাকে ভয় পেলে চলবে না । দুদিন সে কোথাও না গিয়ে তাঁবুতে বসে মন স্থির করে ভাববার চেষ্টা করলে, সে এখন কি করবে । হঠাৎ তার মনে হোল, আলভারেজের সেই কথাটা - সলসবেরি...এখান থেকে পূব-দক্ষিণ কোণে আন্দাজ ছশো মাইল...
 সলসবেরি ।...দক্ষিণ রোডেশিয়ার রাজধাণী সলসবেরি । যে করে হোক, পৌঁছুতেই হবে তাকে সলসবেরিতে । সে এখনও অনেকদিন বাঁচবে, তার জন্মকোষ্ঠীতে লেখা আছে । এ জায়গায় বেঘোরে সে মরবে না ।
চাঁদের পাহাড়122.jpg
 শঙ্কর ম্যাপগুলো খুব ভালো করে দেখলে ।

চাঁদের পাহাড়/নবম পরিচ্ছেদ

নয়
 আগ্নেয় পর্ব্বতের অত কাছে বাস করা আলভারেজ উচিত বিবেচনা করলে না । ওলডোনিও লেঙ্গাই পাহাড়ের ধূমায়িত শিখরদেশের সান্নিধ্য পরিত্যাগ করে, তারা আরও পশ্চিম ঘেঁসে চলতে লাগল । সেদিকের গহণ অরণ্যে আগুনের আঁচটীও লাগেনি, বর্ষার জলে সে অরণ্য আরও নিবিড় হয়ে উঠেচে, ছোট ছোট গাছপালার ও লতাঝোপের সমাবেশে । ছোট বড় কত ঝরণাধারা ও পার্ব্বত্য-নদী বয়ে চলচে - তাদের মধ্যে একটাও আলভারেজের পূর্ব্ব পরিচিত নয় ।
 এইবার এক জায়গায় ওরা এসে উপস্থিত হোল, যেখানে চারিদিকেই চূণাপাথর ও

চাঁদের পাহাড়/অষ্টম পরিচ্ছেদ

আট
 মাঝ-রাত্রে শঙ্করের ঘুম ভেঙে গেল। কি একটা শব্দ হচ্ছে ঘন বনের মধ্যে, কি একটা কান্ড কোথায় ঘটচে বনে। আলভারেজও বিছানায় উঠে বসেচে। দু’জনেই কান-খাড়া করে শুনলে— বড় অদ্ভুত ব্যাপার! কি হচ্ছে বাইরে?
 শঙ্কর তাড়াতাড়ি টর্চ্চ জ্বেলে বাইরে আসছিল, আলভারেজ বারণ করলে। বল্লে—এসব অজানা জঙ্গলে রাত্রিবেলা ওরকমতাড়াতাড়ি তাঁবুর বাইরে যেও না। তোমাকে অনেকবার সতর্ক করে দিয়েচি। বিনা বন্দুকেই বা যাচ্চ কোথায়?
 তাঁবুর বাইরে রাত্রি ঘুটঘুটে অন্ধকার। দু’জনেই টর্চ্চ ফেলে দেখলে—
 বন্য-জন্তুর দল গাছ-পালা ভেঙ্গে ঊর্দ্ধশ্বাসে

চাঁদের পাহাড়/সপ্তম পরিচ্ছেদ

সাত
তারপর দিন দুই কেটে গেল । ওরা ক্রমশঃ গভীর থেকে গভীরতর জঙ্গলের মধ্যে প্রবেশ করলে । পথ কোথাও সমতল নয়, কেবল চড়াই আর উৎরাই, মাঝে মাঝে কর্কশ ও দীর্ঘ টুসক ঘাসের বন, জল প্রায় দুষ্প্রাপ্য, ঝরণা এক আধটা যদিও বা দেখা যায়, আলভারেজ তাদের জল ছুঁতেও দেয় না । দিব্যি স্ফটিকের মত নির্ম্মল জল পড়চে ঝরণা বেয়ে, সুশীতল ও লোভনীয়, তৃষ্ণার্ত্ত লোকের পক্ষে সে লোভ সম্বরণ করা বড়ই কঠিন - কিন্তু আলভারেজ জলের বদলে ঠাণ্ডা চা খাওয়াবে তবুও জল খেতে দেবে না । জলের তৃষ্ণা ঠাণ্ডা চায়ে দূর হয় না, তৃষ্ণার কষ্টই সব চেয়ে বেশী কষ্ট বলে মনে হচ্ছিল শঙ্করের ।

চাঁদের পাহাড়/ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ

ছয়
দিন পনেরো পরে শঙ্কর ও আলভারেজ উজিজি বন্দর থেকে ষ্টীমারে টাঙ্গানিয়াকা হ্রদে ভাসল । হ্রদ পার হয়ে আলবার্টভিল বলে একটা ছোট শহরে কিছু আবশ্যকীয় জিনিস কিনে নিল । এই শহর থেকে কাবালো পর্য্যন্ত বেলজিয়ান গভর্ণমেন্টের রেলপথ আছে । সেখান থেকে কঙ্গো নদীতে ষ্টীমারে চড়ে তিনদিনের পথ সানকিনি যেতে হবে, সানকিনিতে নেমে কঙ্গো নদীর পথ ছেড়ে, দক্ষিণ মুখে অজ্ঞাত বনজঙ্গল ও মরুভূমির দেশে প্রবেশ করতে হবে ।
কাবালো অতি অপরিষ্কার স্থান, কতকগুলো

চাঁদের পাহাড়/পঞ্চম পরিচ্ছেদ

পাঁচ
 শঙ্করের সেবা-শুশ্রূষার গুণে ডিয়েগো আলভারেজ সে যাত্রা সেরে উঠল এবং দিন পনেরো শঙ্কর তাকে নিজের কাছেই রাখলে। কিন্তু চিরকাল যে পথে পথে বেড়িয়ে এসেচে, ঘরে তার মন বসে না। একদিন সে যাবার জন্যে ব্যস্ত হয়ে পড়ল। শঙ্কর নিজের কর্ত্তব্য ঠিক করে ফেলেছিল। বল্লে— চল, তোমার অসুখের সময় যেসব কথা বলেছিলে, মনে আছে? সেই হলদে হীরের খনি?
 অসুখের ঝোঁকে আলভারেজ যে সব কথা বলেছিল, এখন সে সম্বন্ধে বৃদ্ধ আর কোনো কথাটি বলে না। বেশীর ভাগ সময় চুপ করে কী

চাঁদের পাহাড়/চতুর্থ পরিচ্ছেদ

চার
 ষ্টেশনে বড়ই জলের কষ্ট। ট্রেণ থেকে যা জল দেয়, তাতে রান্না-খাওয়া কোনোরকমে চলে— স্নান আর হয় না । এখানকার কুয়োর জলও শুকিয়ে গিয়েচে । একদিন সে শুনলে ষ্টেশনে থেকে মাইল তিনেক দূরে একটা জলাশয় আছে, সেখানে ভালো জল পাওয়া যায়, মাছও আছে ।
 স্নান ও মাছ ধরবার আকর্ষণে একদিন সে সকালের ট্রেণ রওনা করে দিয়ে সেখানে মাছ ধরতে চলল— সঙ্গে একজন সোমালি কুলী, সে পথ দেখিয়ে নিয়ে গেল। মাছ ধরার সাজসরঞ্জাম

চাঁদের পাহাড়/তৃতীয় পরিচ্ছেদ

তিন
 নতুন পদ পেয়ে উৎফুল্ল মনে শঙ্কর যখন ষ্টেশনটাতে এসে নাম্‌ল তখন বেলা তিনটে হবে । ষ্টেশন ঘরটা খুব ছোট । মাটীর প্ল্যাটফর্ম্ম, প্ল্যাটফর্ম্ম আর ষ্টেশন ঘরের আশ পাশ কাঁটা তারের বেড়া দিয়ে ঘেরা । ষ্টেশন ঘরের পেছনে তার থাক্‌বার কোয়ার্টার । পায়রার খোপের মতো ছোট । যে ট্রেনখানা তাকে বহন করে এনেছিল, সেখানা কিসুমুর দিকে চলে গেল । শঙ্কর যেন অকুল সমুদ্রে পড়ল । এত নির্জ্জন স্থান সে জীবনে কখনো কল্পনা করেনি ।
 এই ষ্টেশনে সে-ই একমাত্র কর্ম্মচারী । একটা

চাঁদের পাহাড়/দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ

দুই
 চার মাস পরের ঘটনা। মার্চ্চ মাসের শেষ।
 মোম্বাসা থেকে রেলপথ গিয়েচে কিমুমু-ভিক্টোরিয়া নায়ান্‌জা হ্রদের ধারে—তারই একটা শাখা লাইন তখন তৈরী হচ্চিল। জায়গাটা মোম্বাসা থেকে সাড়ে তিন শো মাইল পশ্চিমে। ইউগাণ্ডা রেলওয়ের নুড্‌স্‌বার্গ ষ্টেশন থেকে বাহাত্তর মাইল দক্ষিণ পশ্চিম কোণে। এখানে শঙ্কর কনষ্ট্রাকসন ক্যাম্পের কেরাণী ও সরকারী ষ্টোরকিপার হয়ে এসেচে। থাকে ছোট একটা তাঁবুতে। তার আশেপাশে অনেক তাঁবু। এখানে এখনও বাড়িঘর তৈরি হয়নি বলে তাঁবুতেই সবাই থাকে। তাঁবুগুলো একটা খোলা জায়গায় চক্রাকারে সাজানো—তাদের চারিধার ঘিরে বহু দূরব্যাপী মুক্ত প্রান্তর, দীর্ঘ দীর্ঘ ঘাসে ভরা, মাঝে মাঝে গাছ। তাঁবুগুলোর ঠিক গায়েই খোলা জায়গার শেষ সীমায় একটা বড় বাওবাব্ গাছ। আফ্রিকার বিখ্যাত গাছ, শঙ্কর কতবার ছবিতে দেখেছে, এবার সত্যিকার বাওবাব্ দেখে শঙ্করের যেন আশ মেটে না।
 নতুন দেশ, শঙ্করের তরুণ তাজা মন—সে ইউগান্ডার এই নির্জ্জন মাঠ ও বনে নিজের

চাঁদের পাহাড়/প্রথম পরিচ্ছেদ

চাঁদের পাহাড়
এক
 শঙ্কর একেবারে অজ পাড়াগাঁয়ের ছেলে। এইবার সে সবে এফ্.এ. পাশ দিয়ে গ্রামে বসেচে। কাজের মধ্যে সকালে বন্ধুবান্ধবদের বাড়ীতে গিয়ে আড্ডা দেওয়া, দুপুরে আহারান্তে লম্বা ঘুম, বিকেলে পালঘাটের বাঁওড়ে মাছ ধরতে যাওয়া। সারা বৈশাখ এভাবে কাটবার পরে একদিন তার মা ডেকে বল্লেন—শোন্ একটা কথা বলি শঙ্কর। তোর বাবার শরীর ভালো নয়। এ অবস্থায় আর তোর পড়াশুনো হবে কী করে? কে খরচ দেবে? এইবার একটা কিছু কাজের চেষ্টা দ্যাখ্।
 মায়ের কথাটা শঙ্করকে ভাবিয়ে তুললে। সত্যিই তার বাবার শরীর আজ ক’মাস থেকে খুব খারাপ যাচ্চে। কলকাতার খরচ দেওয়া তাঁর পক্ষে ক্রমেই অসম্ভব হয়ে উঠচে। অথচ করবেই