গত পর্বে বলেছিলাম মৌমাছি আর খরগোসের জীবনে ফিবোনাক্কি ধারার কথা।আজ দেখি আরোও মজার কিছু-
একটি গাছ কিভাবে বৃদ্ধি পায় তা খেয়াল করলে দেখব গাছ গুলোর ডাল পালা গজানোর একটা নিয়ম আছে, প্রতিটা শাখা তার আগের শাখার একটু উপরে থাকে এবং ঠিক একই জায়গায় কখনো দুইটা শাখা এক সাথে থাকে না, ঠিক নিচের ছবির মত-
এখন যদি নিচ থেকে ডাল গুলোর সংখ্যা গুনতে গুনতে উপরে যাই তাহলে-
1 2 3 5 8 13……………….. ফিবোনাক্কি সংখ্যা!!
এবার পাতায় আসি, পান বা সূর্যমুখি গাছের মত যে সব গাছ আছে তার পাতাগুলো কিভাবে থাকে? নিচের ছবিটা দেখি-
পাতা গুলো খেয়াল করি, বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে আছে। পাতাগুলোতে নাম্বার দেয়া আছে। আমরা এখন দেখি, কোন কোন পাতা গুলো একই অভিমূখে আছে। এখানে, 6 এবং 14 নাম্বার পাতা দুটো একই অভিমুখে আছে। তাহলে এই একই অভিমুখের দুটি পাতার মাঝে কত গুলো পাতা আছে? ঠিক ধরেছেন- 14-6 = 8, একটি ফিবোনাক্কি সংখ্যা!! আমরা ছবিটা একটু উপর থেকে দেখি-
এখন দেখা যায়, ১,৯ একই অভিমুখে, পার্থক্য ৮, ফিবোনাক্কি সংখ্যা!, ২,৭ একই অভিমুখে, পার্থক্য ৫, ফিবোনাক্কি সংখ্যা!! ২,১৫ ও একই অভিমুখে, পার্থক্য ১৩, ফিবোনাক্কি সংখ্যা!!…………ফিবোনাক্কি সংখ্যা!ফিবোনাক্কি সংখ্যা!!ফিবোনাক্কি সংখ্যা!!!
আসলে উদ্ভিদবিজ্ঞানে এই ফিবোনাক্কি ধারা ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে আছে, ফুলের পাপড়িতে, সূর্যমুখি ফুলের বীজে, ফুলকপি ইত্যাদি অনেক জায়গায় অনেক ভাবে এই ফিবোনাক্কি ধারা পাওয়া যায়।এগুলো নিয়ে পরবর্তি পর্বে আরও বিস্তারিত ভাবে আলোচনা হবে, তবে এখন আমরা গাছ গাছালির কথা বাদ দেই। আমরা এখন খাতা কলম নিয়ে কিছু কাজ করি। আমরা যে কোনো দুইটি পাশাপাশি ফিবোনাক্কি সংখ্যা ( যেমন- ১৩ এবং ৮ ) নিয়ে নিচের মত করে একটা আয়তক্ষেত্র আঁকি।
এবার যদি আমরা এই আয়তক্ষেত্র এর মাঝে একটা দাগ টেনে নিচের মত করে একটা বর্গক্ষেত্র আঁকি তাহলে এর বাম পাশে আরেকটা আয়ত উৎপন্ন হবে-
অর্থাৎ বাম পাশে ৮*৮ এর একটা বর্গ এবং ডান পাশে ৮*৫ এর একটা আয়ত উৎপন্ন হবে। মজার ব্যাপার হল ডান পাশের আয়ত এর দৈঘ এবং প্রস্থ ফিবোনাক্কি সংখ্যা। এবার আগের মত করে ডান পাশের আয়ত এর মাঝে একটা দাগ টেনে বর্গ আকা যায়-
এখন আবার ডান পাশের উপরে ৫*৫ এর বর্গ এবং ডান পাশের নিচে ৫*৩( ফিবোনাক্কি সংখ্যা !) আয়ত উৎপন্ন হয়। একই ভাবে নিচের আয়ত এর মাঝে দাগ টেনে বর্গ আকলেও একি ভাবে আরেকটা আয়ত পাবো। এভাবে আকতে থাকলে নিচের চিত্রের মত দেখাবে-
এবার বাম পশের নিচের কোন থেকে প্রত্যেক কোনায় দাগ টেনে যোগ করলে নিচের মত হবে-
এই নকশাটাকে বলা হয় ফিবোনাক্কি স্পাইরাল। নকশাটা নিশ্চই চিনতে পেরেছেন। যারা পারেন নি তাদের জন্য নিচের ছবি টা-
তাহলে দেখা গেলো শামুকের খোলের ডিজাইনেও ফিবোনাক্কি ধারার কারসাজি। এই হল ফিবোনাক্কি ধারার রহস্য। নিচে আরোও কিছু ছবি দিচ্ছি, দেখুন কেমন লাগে-