PK

Mpemba Effect

ফ্রিজে যদি একইসাথে গরম জল

এবং আর ঠাণ্ডা জল রাখি তবে

কোনটি আগে বরফে পরিণত হবে?


কমন সেন্স থেকে আমাদের উত্তর হচ্ছে ঠাণ্ডা জলটাই আগে বরফে পরিণত হবে। অন্তত বেসিক থার্মোডাইনামিক্স সেটাই বলে। কিন্ত না। একইসাথে গরম জল আর আর ঠাণ্ডা জলকে শীতল করা হয় তবে গরম জলটাই আগে বরফে পরিণত হবে। আজ্ঞে হ্যা

এটাই সায়েন্স! আর এই ইফেক্টটাকে বলা হয় Mpemba Effect.


Mpemba Effect এর নামকরণের ইতিহাসটাও বেশ ইন্টারেস্টিং। ১৯৬৩ সালে আফ্রিকার এক অতি দরিদ্র দেশ তানজানিয়ার এক ১৩ বছর বয়েসি স্কুলবালক Erasto Mpemba তার কুকিং ক্লাসের শিক্ষককে বলল যে সে আইসক্রিম বানাতে গিয়ে দেখেছে ঠাণ্ডা জলের চেয়ে গরম জল ফ্রিজে দিলে দ্রুততম সময়ের মধ্যে আইসক্রিম পাওয়া যাচ্ছে। শিক্ষক তো একপ্রকার হেসেই খুন। এও কি হয় নাকি! সেসময় স্কুলে ফিজিক্সের একটা সায়েন্স প্রজেক্ট চলছিল।


Mpemba তখন করল কি একদিন দুম করে সবার সামনে আইসক্রিম বানানোর ঘোষণা দিল। এটাই তার সায়েন্স প্রজেক্ট। সবার সামনে সে গরম জল থেকে দ্রুত আইসক্রিম বানিয়ে দেখাবে। নির্ধারিত দিনে সে তার সব উপকরণ নিয়ে হাজির। দুটো পাত্রে সব মিক্স করা হল। একটাতে ফুটন্ত জলেতে। অপর পাত্রে ঠাণ্ডা জলেতে। এরপর রেখে দেয়া হল ফ্রিজারে। অবাক কাণ্ড! মাত্র দেড় ঘণ্টার মধ্যে গরম পাত্রের জল থেকে তৈরি হয়ে গেছে আইসক্রিম। আর ঐদিকে ঠাণ্ডা পাত্রের মিশ্রণ এখনো লিকুইড। এই ঘটনাটা সেসময় সারা বিশ্বে বেশ আলোড়ন তুলেছিল। আর এই Erasto Mpemba’র নামানুসারেই এটার নামকরণ হয় Mpemba Effect।


ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হচ্ছে এই ঘটনার এখনো পর্যন্ত কোন সুনির্দিষ্ট সায়েন্টিফিক ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি। অনেকে অনেকভাবে এটাকে ব্যাখ্যা করেছেন। কিন্ত একক কোন সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যার কথা আলাদা করে বলা যায় না। পপুলার কয়েকটা ব্যাখ্যার মধ্যে কয়েকটা হচ্ছে Evaporation Theory, Convection Current Theory, Supercooling Theory ইত্যাদি ইত্যাদি। তবে সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা এটাকে অন্য একটা লেভেলে নিয়ে গেছেন একটা মলিকুলার থিওরির মাধ্যমে।


যাইহোক থিওরির ব্যাপারগুলা তোলা থাক আপাতত। একটা কাজ করতে পারেন। যাদের কোন রিলেটিভ বিদেশে আছে যেখানে এই শীতে টেম্পারেচার হিমাঙ্কের অনেক নিচে নেমে যাবে। যেমন মাইনাস ২৫-৩০ ডিগ্রি। তাদেরকে বলবেন এক্সপেরিমেন্টটা করতে। দুটো মগে একটাতে ঠাণ্ডা জল (রুম টেম্পারেচার), আরেকটাতে ফুটন্ত জল নিয়ে বাইরে গিয়ে উপরের দিকে ছুঁড়ে মারতে। ফলাফলটা আমি বলে দেই। ঠাণ্ডা জলটা লিকুইড হিসেবেই নিচে পড়বে। আর গরম জলটা বরফ (স্নো) হয়ে পড়বে।