PK

Octopus


 এই বিশ্বজুড়ে কত কিছুই না রয়েছে। যা আমাদের অজানা। যেমন এই অক্টোপাস। প্রশান্ত মহাসাগরের বিশালাকৃতির অক্টোপাসের গল্পটা একটু অন্যরকম। এই অক্টোপাস পৃথিবীর সেরা মা? শুনে অবাক লাগছে। শুনুন তাহলে গল্পটা। বড়ই দুঃখের এই মায়ের কাহিনি। জীববিজ্ঞানী জিম কসগ্রোভের প্রথম এই গল্পটি বলেন। জিম যখন এই অক্টোপাসকে পর্যবেক্ষণে রেখেছিলেন তন শীতকাল। চার পাঁচ মাস ধরে অক্টোপাসটি তার শরীরের ভেতর ডিম নিয়ে চলেছে। যখন জলের তাপমাত্রা ঠিক থাকে তখন ,সে তার শরীর থেকে ডিমগুলি জলে ছেড়ে দেয়। একসঙ্গে প্রায় ৫৬ হাজার ডিম পাড়তে পারে। আর এই কয়েক মাস সে কোনও রকম খাবার খায় না। একটি অক্টোপাস প্রায় পাঁচ লক্ষ অক্টোপাস তৈরির ক্ষমতা রাখে। মূলত জলের তলায় নুড়ি পাথর ঘেরা সুরক্ষিত গুহার মধ্যেই ডিম পাড়ে অক্টোপাস। এবং সেই ডিমগুলি সে নিজেই পাহারা দেয়। যাতে ক্ষুধার্ত কাঁকড়া, স্টার ফিস সেই ডিমগুলি খেয়ে না নেয়। কসগোভের কথায় সেই ডিমগুলি প্রতিটিই সাদা পুঁতির মতো। এভাবেই তা কিছুদিন থাকার পর সাদা কোশে পরিণত হয় এবং সেখান থেকেই অক্টোপাসের জন্ম হয়। জন্ম হওয়ার পর আরও ছ'মায় মা ওভাবেই আগলে রাখে তার শিশুদের।

তবে ডিম পাড়ার পর অক্টোপাস তার দুই বাহু বিছিয়ে সেই গুহার সামনে শুয়ে থাকে। এবং সাইফনের সাহায্যে তরঙ্গ সৃষ্টি করে। এর ফলে ক্ষতিকর কোনও কিছুর প্রভাবই পড়তে পারে না সেই ডিমের উপর। এবং ডিমের মধ্যে যাতে পর্যাপ্ত বায়ুচলাচল করতে পারে তার ব্যবস্থাও করে রাখে। শিকারীরা কোনও কারণে কাছাকাছি এলে তাদের শুঁড়ের সাহায্যে নিঃশব্দে আঘাতও করে এই অক্টোপাস। বছরের অর্ধেকের বেশি সময় অক্টোপাস তার ছানাদের জন্য ব্যায় করে। আর এই সময়টায় সে কিছুই খায় না। এমনও হয়েছে আনাহারে পেটে ডিম নিয়ে অক্টোপাসের মৃত্যুও হয়েছে। তবুও যতক্ষণ না বংশের উত্থান না হয় ততক্ষণ সে কোথাও যায় না।

অক্টোপাসের এই ডিমের মাপ হয় চালের দানার মতো। আর যে স্থান তারা ডিম পাড়ার জন্য বেছে নেয় তাকে বলা হয় অক্টোপাস ডেন। বিভিন্ন চিনা রেস্তোরাঁয় সেই অক্টোপাসের ডেন শিল্পসজ্জা হিসেবেও ব্যবহার করা হয়।

সন্তানের প্রতি মা অক্টোপাসের এই যে স্বার্থত্যাগ সে কথা মাথায় রেখেই বিজ্ঞানী জিম কসগ্রোভ বলেছিলেন কোনও মা বোধহয় সন্তানের জন্য এতটা করতে পারেন না!!